Monday, May 11, 2015

ডোমেইন কি? কিভাবে কাজ করে? এর খুঁটিনাটি

আসালামু-আলাইকুম । সবাই কেমন আছেন? অনেকদিন পর লিখতে বসলাম । এখন প্রতিদিনই তৈরি হচ্ছে অসংখ্য ওয়েবসাইট । ওয়েবসাইট এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় জিনিসটি হচ্ছে ডোমেইন । তাই, আজ আমরা ডোমেইন সম্পর্কে জানবো ।

ডোমেইন কি?

প্রত্যেক মানুষের একটি নাম আছে । এই নামটি তার পরিচয় বহন করে থাকে । ডোমেইন নেম অনেকটা মানুষের নামের মতই । ডোমেইন নেম এবং মানুষের নামের মদ্ধে পার্থক্য হচ্ছে মানুষের নাম ইউনিক নয় অর্থাৎ একটি নাম একাধিক মানুষের থাকে । কিন্তু ডোমেইন নেম সম্পূর্ণ ইউনিক অর্থাৎ একটি ডোমেইন পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই ।
ডোমেইন হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট এর ঠিকানা । যার মাধ্যমে, ব্যবহারকারী আপনার ওয়েবসাইটটি খুঁজে পাবে ।
যেমন; www.techspate.com একটি ডোমেইন নেম ।
ডোমেইন নেম  এর পরিবর্তে আইপি এড্রেস ব্যবহার করা যায় । আইপি এড্রেস সাধারণত সংখ্যা দিয়ে প্রকাশ করা হয় ।
যেমন; 10.196.001.002 একটি আইপি এড্রেস ।
একটি ওয়েবসাইট এ বেশ কিছু অংশ থাকে । যেমন;
http//:www.techspate.com একটি ডোমেইন নেম ।
domain-5
এখানে, “http://” অংশটুকু হচ্ছে প্রোটোকল, “www.” হচ্ছে  Hostname, “techspate” হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের নাম/ডোমেইন নেম/2nd Level Domain এবং “.com” অংশটুকু হচ্ছে ডোমেইন এক্সটেনশন ।
অর্থাৎ একটি সাইটের গঠনঃ প্রোটোকল//:ওয়েব.ডোমেইন নেম.ডোমেইন এক্সটেনশন ।

সাবডোমেইন কি?

আপনার ডোমেইন নেম এর পূর্বে কিছু কিওয়ার্ড/শব্দ ব্যবহার করে আরেকটি ডোমেইন তৈরি করা-ই হচ্ছে সাবডোমেইন ।
যেমন; www.blog.techspate.com একটি সাবডোমেইন । এটি  www.techspate.com অধীনে তৈরি । আপনি আপনার সাইটের অধীনে অনেকগুলো সাবডোমেইন রাখতে পারেন ।
একটি সাবডোমেইন এর গঠনঃ http://www.সাবডোমেইন নেম.আপনার ডোমেইন নেম.com

ডোমেইন কিভাবে কাজ করে?

আপনি যখন কোন ব্রাউজারের এড্রেসবারে কোন ওয়েবসাইট লিখে থাকেন, তখন নিম্নলিখিত ধাপগুলোর মাধ্যমে ডোমেইন কাজ করেঃ
আপনি যখন  http://www.techspate.com এ প্রবেশ করেন তখন নিচের কাজ গুলো সম্পাদিত হয়;
  1. ব্রাউজার আইপি এড্রেস অনুসন্ধান করে,
  2. SG নেমসার্ভার এ রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়,
  3. SG রিকোয়েস্টটি গ্রহণ করে লোকাল সার্ভার প্রাইমারি সার্ভার এর সাথে যোগাযোগ করে,
  4. প্রাইমারি নেমসার্ভার http://www.techspate.com  এর আইপি এড্রেস লোকাল নেম সার্ভারে পাঠানো হয় এবং
  5. http://www.techspate.com সাইটটি ব্রাউজারে প্রদর্শিত হয় ।

ডোমেইন নেম এর সীমাবদ্ধতাঃ

• আপনি ডোমেইন নেম এ সর্বোচ্চ ৬৩ টি অক্ষর ব্যবহার করতে পারবেন ।
• ডোমেইন নেম এ হাইপেন(-), অক্ষর এবং সংখ্যা ব্যবহার করতে পারবেন ।
• সংখ্যা অথবা হাইপেন দিয়ে ডোমেইন নেম শুরু করতে পারবেন ।
• বিশেষ প্রতীক(Symbol)  (যেমন; ~!#$%^&*()) ইত্যাদি ডোমেইন নেম এ ব্যবহার করা যাবেনা ।
আজ আর নয় । ধন্যবাদ সবাইকে আমার লেখাটি পড়ার জন্য । উপকৃত হলে মন্তব্য করতে ভুলবেন না ।
ফেইসবুক এ আমি

 orginal post : http://techspate.com/noyon/14334/

ডোমেইন নেম ও ওয়েব হোস্টিংয়ের বিস্তারিত

আমাদের অনেকের নিজের কিংবা প্রতিষ্ঠানের জন্য ওয়েব সাইট তৈরি করার প্রয়োজন পড়ে । কিন্তু ওয়েব সাইট হোস্টিংয়ের বিষয়টি অনেকের কাছে কঠিন মনে হয় । আমি সহজ ভাবে আপনাদের বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করছি ।
ওয়েব সাইট হোস্টিং কি ?
কোন তথ্যকে অন্যের কাছে তুলে ধরার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সহজ মাধ্যম হচ্ছে ওয়েবসাইট । আজকের কম্পিউটার ব্যবহারকারী মাত্রই ওয়েবসাইট সম্পর্কে অবগত আছেন । সহজ ভাষায় বলা যায়, ওয়েবসাইট হল আপনার তথ্যকে অন্যের সামনে উপস্থাপন করার রাস্তা- সেটা টেক্সট বা মাল্টিমিডিয়া (যেমনঃ ছবি, অডিও বা ভিডিও) যে কোন ধরনের হতে পারে । ওয়েবসাইটে সেগুলো সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা ওয়েব ডেভেলপারের কাজ । আর আপনার ওয়েবসাইটটি অন্যদের দেখার জন্য উপযোগী করাই ওয়েব হোস্টিং নামে পরিচিত ।
আপনার ওয়েবসাইটটিকে যদি তুলনা করা হয় আপনার প্রতিষ্ঠানের অফিস বিল্ডিং হিসাবে, তবে তার তথ্য বা কনটেন্ট হবে এর আসবাবপত্র । আর ওয়েবসাইট ডেভেলপ করাকে তুলনা করা যাবে বাড়িটি তৈরি করার সাথে । সেক্ষেত্রে ওয়েবসাইট হোস্টিংকে তুলনা করা যায় আপনার অফিস বিল্ডিংয়ের জন্য জায়গা কেনা এবং সে জায়গায় বাড়িটি তৈরি করার সাথে । তবেই ভিজিটররা ওয়েবসাইটি ব্যবহার করার সুজোগ পাবে ।

ডোমেইন নেম কি ?
আগের উদাহরনে ফিরে যায় । আপনার অফিসে যদি কেউ আসতে চায়, তবে তাকে এর ঠিকানা জানতে হবে । ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে এই ঠিকানাটা হচ্ছে তার নাম যাকে বলা হয় ডোমেইন নেম । এই ডোমেইন নেমই আপনার ওয়েবসাইটকে অনন্যভাবে আইডেন্টিফাই করবে । বিশ্বের সবাই ওয়েবসাইটটিকে চিনবে এবং একসেস করবে এ নাম ব্যবহার করে ।
ডোমেইন নেম সিস্টেম (DNS) কি ?
কম্পিউটার বা নেটওয়ার্ক সফটওর্য়ার কিন্তু কোনো ডোমেইন নেমকে সরাসরি বুঝে না । সে বুঝে নেটওর্য়াক অ্যাড্রেস বা আইপি অ্যড্রেস । তাই প্রত্যেক ডোমেইন নেমের সাথে একটা আইপি অ্যাড্রেস এসাইন করা হয় । ডোমেইন নেম ব্যবহার না করে এ আইপি অ্যড্রেস দিয়েও সরাসরি ওযেবসাইটটিতে যাওয়া যায় । আইপি অ্যাড্রেস মনে রাখা বেশ কঠিন, সাধারণত ১২ অংকের সংখ্যা হয় । তাই বাস্তবে সবাই ডোমেইন নেম ব্যবহার করে

কিন্তু আপনার কম্পিউটারের আইপি অ্যাড্রেস জানা দরকার যে কোন ধরনের কমিউনিকেশনের জন্য । সর্বপ্রথম নেটওর্য়াক ARPANET -এর সময় host.txt নামে একটা ফাইলে সব কম্পিউটারের নাম আর তার আইপি অ্যাড্রেস লিখে রাখা হত । যখন নেটওয়ার্কে কোটি কোটি কম্পিউটার থাকে, তখন এভাবে আইপি অ্যাড্রেস লিখে রাখা সহজ কথা নয় । কারন প্রতিনিয়ত আইপি অ্যড্রেস সংযুক্ত হয় এবং পরিবর্তিত হয় । এ সমস্যার সমাধানে ধারাবাহিক, ডায়নামিক এবং ডিস্ট্রিবিউটেড ডাটাবেজ সম্বলিত একটা সিস্টেম দাঁড় করানো হয়েছে, যাকে বলা হয় ডোমেইন নেম সিস্টেম ।
ডোমেইন নেমকে কতগুলো লেভেলে ভাগ করা হয়ে থাকে । প্রায় ২৪০ টি টপ লেভেল ডোমেইন আছে, বাকি সবই থাকে এদের অধীনে একটা ট্রি স্ট্যাকচারে । ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তুর উপর ভিত্তি করে প্রায় ১৯ টি টপ লেভেল ডোমেইন আছে । এর মধ্যে সাধারণ সব ওয়েবসাইটের জন্য .com, ব্যবসায়িক ওয়েবসাইটের জন্য .biz, খবর ও অনান্য ইনফরমেশন সাইটের জন্য .info, নন প্রফিটেবল অর্গানাইজেশনের জন্য .org, অনলাইন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানেনর জন্য .net। আবার প্রায় প্রত্যেক দেশের রয়েছে নিজস্ব টপ লেভেল ডোমেইন, যেমনঃ ব্রিটেনের .uk, জাপানের .jp, যুক্তরাষ্টের .us বাংলাদেশের .bd ইত্যাদি ।

আপনার সাধের ওয়েবসাইট এর জন্য হোস্টিং কেনার আগে জেনে নিন, “সার্ভার আপ-টাইম” কি? কিভাবে না জেনে আমরা ভুল হোস্টিং কিনি?

সারা পৃথিবীতে এখন অনলাইন থেকে আয় করার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। আপনার নিজের একটি ওয়েবসাইট থাকলে আপনি সহজেই গুগল এডসেন্স বা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অনেক টাকা আয় করতে পারেন। কোনো ওয়েবসাইট সরাসরি কাজের সুযোগ করে দিয়ে প্রচুর টাকা আয় করে। বাংলাদেশে বিভিন্ন পত্রিকা, ব্লগ বা বিক্রয় ডট কম এর মতো অনেক বিজ্ঞাপনের ওয়েবসাইট আছে, যারা বিজ্ঞাপন প্রচার করে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে। আমাদের সকলের প্রিয় “টেকটিউনস” বিজ্ঞাপন ও স্পন্সর টিউন প্রচার করে অনেক টাকা আয় করে।
আপনার ওয়েবসাইট থেকে আপনাকে আয় করতে হলে আবশ্যই আপনাকে ভালো একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। ইন্টারনেট ভিজিটর এর চাহিদা মত ভালো সার্ভিস যদি আপনি আপনার ওয়েবসাইট এ দিতে পারেন, তবে টাকার পিছনে আপনাকে দৌড়াতে হবে না। টাকাই আপনাকে খুঁজে নিবে।
ভালো সার্ভিসযুক্ত দৃষ্টি নন্দন একটা ওয়েবসাইট তৈরি করার পর আপনাকে অবশ্যই আপনার ওয়েবসাইট কে একটা ভালো সার্ভার এ হোস্ট করতে হবে। কারন, আপনার সাধের ওয়েবসাইট কে দুর্বল হোস্টিং কোম্পানির সার্ভার এ হোস্ট করলে, আপনি আপনার ভিজিটর হাঁড়াতে পারেন। কখনো কখনো দেখা যায়, ওয়েবসাইট দেরীতে লোড হয়। কখনো সার্ভার এর আপ-টাইম কম হওয়াই আপনার ওয়েবসাইট ডাউন থাকে। তখন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট এ ভিজিট করতে পারবে না। আমাদের বাংলাদেশে অনেক হোস্টিং কোম্পানি সার্ভার ডাউন থাকলে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। এটা অনেক বিরক্তিকর।
আমরা সবসময় শুনি, হোস্টিং কোম্পানি গুলো তাদের বিজ্ঞাপনের সময় বলে, “৯৯% সার্ভার আপ-টাইম” কিমবা “৯৯.৯% সার্ভার আপ-টাইম”। আমাদের মধ্যে অনেকেই এই সার্ভার আপ-টাইম শব্দ টা বুঝি না। আসুন একটু বুঝে নেওয়ার চেস্টা করি।
“সার্ভার আপ-টাইম” হলো একটি সার্ভার কতক্ষণ চালু বা কার্যক্ষম থাকে তার সময়। আপনার ওয়েবসাইট যে সার্ভার এ হোস্ট করা থাকবে, সেটা যতক্ষণ কার্যক্ষম থাকবে, আপনার ওয়েবসাইট ততক্ষণ ভিজিটর ভিজিট করতে পারবে। অন্য সময় আপনার ওয়েবসাইট লোড হবে না। সুতরাং সার্ভার আপ-টাইম যত বেশি হবে তত ভালো। ১০০% সার্ভার আপ-টাইম আমি আজ পর্যন্ত দেখি নাই। তবে কোনো কোনো হোস্টিং কোম্পানি ৯৯.৯৯৯% পর্যন্ত সার্ভার আপ-টাইম সার্ভিস দেয়।
সার্ভার আপ-টাইম সাধারনত % আকারে পরিমাপ করা হয়। তবে আপনি অঙ্ক কষে সহজেই আপনার ওয়েবসাইট এর সার্ভার আপ-টাইম ও সার্ভার ডাউন-টাইম হিসেব করতে পারবেন। “সার্ভার ডাউন-টাইম” হলো আপনার ওয়েবসাইট কতটা সময় অনলাইন এ থাকবে না বা ডাউন থাকবে। যদি কোনো হোস্টিং কোম্পানি ৯৯% আপ টাইম এর গ্যারান্টি দেয়, তবে বুঝতে হবে, সেখানে আপনার ওয়েবসাইট ১% ডাউন থাকবে। অর্থাৎ প্রায় প্রতি সপ্তাহে আপনার ওয়েবসাইট ১ ঘন্টা, ৪০ মিনিট এবং ৪৬ সেকেন্ড বন্ধ থাকবে বা ডাউন থাকবে। এটা কিন্তু আপনার উপার্জনক্ষম ওয়েবসাইট এর জন্য কোনো অবস্থায় ভালো নয়।
সার্ভার এর আপ টাইম কত হলে, আপনার ওয়েবসাইট কেমন অবস্থায় থাকবে তার একটা সাধারন হিসাব নিচে দেওয়া হল।
  • ৯৯% সার্ভার আপ টাইম = আপনার ওয়েবসাইট দিনে ১৪.৪ মিনিট বন্ধ থাকবে
= আপনার ওয়েবসাইট সপ্তাহে ১.৭ ঘন্টা বন্ধ থাকবে
= আপনার ওয়েবসাইট মাসে ৭.২ ঘন্টা বন্ধ থাকবে
  • ৯৯.৯% সার্ভার আপ টাইম = আপনার ওয়েবসাইট দিনে ১.৪৪ মিনিট বন্ধ থাকবে
= আপনার ওয়েবসাইট সপ্তাহে ০.১৭ ঘন্টা বন্ধ থাকবে
= আপনার ওয়েবসাইট মাসে ০.৭২ ঘন্টা বন্ধ থাকবে
  • ৯৯.৯৯% সার্ভার আপ টাইম = আপনার ওয়েবসাইট দিনে ০.১৪ মিনিট বন্ধ থাকবে
= আপনার ওয়েবসাইট সপ্তাহে ০.০২ ঘন্টা বন্ধ থাকবে
= আপনার ওয়েবসাইট মাসে ০.০৭ ঘন্টা বন্ধ থাকবে
  • ৯৯.৯৯৯% সার্ভার আপ টাইম = আপনার ওয়েবসাইট দিনে ০.০১ মিনিট বন্ধ থাকবে (সব চেয়ে কম)
= আপনার ওয়েবসাইট সপ্তাহে ০.০০১ ঘন্টা বন্ধ থাকবে (সব চেয়ে কম)
= আপনার ওয়েবসাইট মাসে ০.০০৭ ঘন্টা বন্ধ থাকবে (সব চেয়ে কম)
যেকোনো হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং নেওয়ার আগে অবশ্যই সার্ভার এর আপ টাইম জেনে নিলে আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য ভালো। তবে মাঝে মাঝে সার্ভার এর কেমন আছে তা আপনার ওয়েবসাইট কেমন রানিং আছে তা বুঝে ঠিক করে নিন। ঠিক মত সার্ভার এর আপ টাইম না পেলে হোস্টিং কোম্পানিকে অভিযোগ করুন। অনেক হোস্টিং কোম্পানি নিজের ইচ্ছেমত সার্ভার এর আপ-টাইম উল্লেখ করে। পরে সার্ভার ডাউন থাকলে, মোবাইল বন্ধ করে দেয়। তাই বুঝে শুনে হোস্টিং বেছে নিন.

আমরা যারা ডোমেইন-হোস্টিং বুঝি না- ও বিপদে পড়ি, তারা কিভাবে এই ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসবো?

নিজের একটি ব্লগ বা অন্য কোনো ওয়েবসাইট অনলাইনে লাইভ থাকার মজাই আলাদা। অনেকে নিজের নামে ওয়েবসাইট খুলতে পছন্দ করেন। বেশ কিছু মানুষ আছেন যারা ব্লগ সাইট খোলেন নিজের মেধা ও জানা-অজানা তথ্য গুলোকে বিশ্বের সকলের মাঝে তুলে ধরার জন্য। তবে যারা ব্লগ সাইট খোলেন, তাদের ভেতর অধিকাংশ মানুষ আশা করেন ব্লগ থেকে বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে টাকা উপার্জন করবেন। ইন্টারনেট থেকে সরাসরি টাকা উপার্জন এর জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান “ব্যবসায়িক” ওয়েবসাইট বা “সেবা বিক্রয়” ওয়েবসাইট খোলেন। আপনি যে ধরনের ওয়েবসাইট এর মালিক বা খুলতে আগ্রহী হোন না কেন, আপনাকে আপনার ওয়েবসাইট ইন্টারনেট এ পাবলিশ/লাইভ করার জন্য যে দুইটা জিনিস প্রথম লাগবে, সেগুলো হলোঃ

ইউনিক ডোমেইনঃ

ডোমেইন হলো ওয়েবসাইট এর নাম-ঠিকানা। যেকোনো ইন্টারনেট ভিজিটর,ব্রাউজার এ আপনার ওয়েবসাইট এর নির্দিষ্ট ডোমেইন প্রবেশকরিয়ে, আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। ওয়েবসাইট এর বিষয় ভিত্তিক “ডোমেইন” নাম নির্বাচন করে ওয়েবসাইট তৈরি অনেক ভিজিটর পাওয়া যায়। আর এই ক্ষেত্রে সহজ সরল ডোমেইন নাম বেছে নেওয়া উচিত।

হোস্টিং সার্ভিসঃ

আপনার ওয়েবসাইট কে একটি নির্দিষ্ট হোস্টিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এর মাধ্যমে হোস্ট করে, আপনার ওয়েবসাইট কে ইন্টারনেট এ লাইভ করে বিশ্বের সকলের কাছে উন্মুক্ত করাই হলো পরবর্তী ধাপ। যেকোনো ওয়েবসাইট মালিক এর জন্য সবচেয়ে ভালো “ওয়েব হোস্টিং” বেছে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “হোস্টিং সার্ভার” ই মূলত আপনার ওয়েবসাইট এর ভেতরের তথ্য গুলোকে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে থাকে এবং ভিজিটরদের চাহিদা মতো ইন্টারনেট এ উপস্থাপন করে। ফলে ভিজিটর রা সহজে নিজের পছন্দ মতো তথ্য বেছে নিতে পারেন।

ইন্টারনেট এ “ডোমেইন” রেজিস্ট্রেশন এর সময় যেসব সুবিধা ও অসুবিধায় আপনারা অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারেন, তার কিছুটা এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করছিঃ

  • নতুন কিমবা পুরাতন যে কোনো ওয়েবসাইট এর জন্য ডোমেইন নাম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।নতুন ওয়েবসাইট তৈরির সময় যথোপযুক্ত “ডোমেইন নাম” নির্বাচনে ওয়েবসাইট মালিকেরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, আপনার পছন্দের ডোমেইন টি অন্য কোনো ওয়েবসাইট ব্যাবহার করছে। এ ক্ষেত্রে হতাস না হয়ে, ডোমেইন নাম এর শেষের অংশের “ডট কম”এর পরিবর্তে অন্যান্য টি এল ডি যেমনঃ ডট নেট, ডট ওআরজি, ডট ইন এই সব দিয়ে আপনার ডোমেইন নাম রেজিস্ট্রেশন এর চেষ্টা করুন।এতে ভালো ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।
  • ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এর জন্য দেশী-বিদেশী বহু কোম্পানি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দিয়ে থাকে। বিদেশী ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে গো ডেডী, নেম চিপ, নেম কোম্পানি অন্যতম। এইসব বিদেশী ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান এর গ্রাহক সেবার মান অত্যন্ত উন্নতমানের।কিন্তু এদের কাছ থেকে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করতে হলে আপনাকে তার মূল্য ডলার দিয়ে পরিশোধ করতে হবে। প্রয়োজন হবে পেপাল, মানি বুকারস বা ইন্টারন্যাশনাল ভিসা/মাস্টার কার্ডের। ফলে বাংলাদেশ থেকে বিদেশী ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর কাছ থেকে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করা অত্যন্ত কষ্টকর। তবে এইসব বিদেশী ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর থেকে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করতে পারলে ভালো।বিদেশী কোম্পানি থেকে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এর পুরো পদ্ধতি টি নিজে নিজে করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। অন্য কারো মাধ্যমে এই সব সাইট থেকে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করলে পরবর্তীতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।বিশেস করে অন্যের ভিসা/মাস্টার কার্ড দিয়ে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করলে, কিছু দিন পরে কার্ডের মালিকানার কাগজপত্র ঠিকঠাক দিতে না পারলে, আপনার ওয়েবসাইট এর ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন বাতিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

  • আমাদের বাংলাদেশি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে ভিসা/ মাস্টার কার্ড বা ডলার দিয়ে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এর ঝামেলা নাই। এই ব্যাপারে আমাদের বাংলাদেশি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান গুলো অনেক ভালো। এখানে খুব সহজেই ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করা যায়। বাংলাদেশি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান গুলোতে আরো বড় বড় সমস্যা আছে যেগুলো কখনো কখনো আপনার মাথা খারাপ করে দিতে পারে। বেশ কিছু বাংলাদেশি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান আছে যারা ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এর পূর্ণ কন্ট্রোল প্যানেল দেননা বা দিতে চান না। তারা বিভিন্ন লোভ দেখিয়ে, আপনাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে আপনার ডোমেইন এর কন্ট্রোল প্যানেল নিজেদের কাছে রেখে দেন এবং পরবর্তী তে কারনে অকারনে আপনার কাছ থেকে মোটা টাকা দাবি করবেন। এদের কাছ থেকে সাবধান। টাকা না দিলে এরা আপনার কেনা ডোমেইন এর রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেয় অথবা ভালো ডোমেইন হলে অন্য কার কাছে বিক্রি করে দেয়। এ ধরনের প্রতিষ্ঠান এর কাছ থেকে ডোমেইন নিলে, তারা আপনার শখের ডোমেইন এর পুনঃ রেজিস্ট্রেশন মুল্য নির্ধারিত মূল্যের দ্বিগুণ বা তিনগুন বেশি দাবী করবে। আপনি দেশী কিমবা বিদেশী যে কোম্পানির কাছ থেকে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করুন না কেন, ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এর পুরো প্রক্রিয়া নিজে নিজে করার চেষ্টা করুন অথবা বিশ্বস্ত কারো সাহায্য নিন।ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করার আগে জেনে নিন, সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান আপনাকে ডোমেইন এর পূর্ণ কন্ট্রোল প্যানেল দিবেন কিনা? যদি না দেন,তবে ঐ সব প্রতিষ্ঠান এড়িয়ে চলুন। এক্তা বিষয় লক্ষণীয় যে, বাংলাদেশে যতগুলো ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান আছে, তারা সবাই বিদেশী কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে “ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা”র রিসেলার একাউন্ট নিয়ে নিজস্ব নাম ব্যাবহার করে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দেয়।
  • বাংলাদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, যারা তাদের ওয়েবসাইট এ সস্তায় ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করার সুযোগ দেয়। আমার ব্যক্তিগত অভিমত, “এদের এড়িয়ে চলুন”। লোভে পড়ে এদের কাছ থেকে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করলে দেখা যাবে, আপনার সাধের ডোমেইন এর রেজিস্ট্রেশন কিছুদিন পর বাতিল হয়ে গেছে অথবা অন্য কন সমস্যা দেখা দিয়েছে। সব চেয়ে বর কথা এরা আপনার ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এর পূর্ণ কন্ট্রোল প্যানেল দিতে চাইবে না। পূর্ণ কন্ট্রোল প্যানেল দিলেও আপনি পরে সমস্যায় পড়তে পারেন।
  • ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এর সময় আপনার নাম, ঠিকানা, আপনার ই-মেইল ও আপনার মোবাইল নাম্বার ব্যাবহার করুন। এতে আপনি কিছুটা নিরাপদ থাকবেন। অন্য কারো ই-মেইল কখনো ব্যাবহার করবেন না।
  • বাংলাদেশি অনেক ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান আছে, যারা “প্রিমিয়াম ডোমেইন” বিক্রি করেন। তারা বলেন, “প্রিমিয়াম ডোমেইন” নাকি তারা ৪০০-৮০০ টাকার মধ্যে বিক্রি করেন। আসলে বাস্তবে “প্রিমিয়াম ডোমেইন” নামে কোনো ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা বাংলাদেশে নেই। অতএব এদের কাছ থেকে ১০০ হাত দূরে থাকুন। বিদেশী ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান গুলোতে, নামকরা দামি ডোমেইন গুলোকে “প্রিমিয়াম ডোমেইন” হিসেবে বিক্রি করে। যার এক একটার দাম পঞ্চাশ-ষাট হাজার টাকারও বেশি।
  • বাংলাদেশি অনেক ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান আছে, যারা ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এর সাথে বিনামুল্যে “প্রাইভেসি প্রটেকশন” সেবা প্রদান করে। এ ধরনের ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান এর কাছ থেকে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করা উচিত।

ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এর পর্ব শেষ হলে, ভালো ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং নেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

ভালো ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং না নিলে যে সব সমস্যা হতে পারে তার কিছুটা আপনাদের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করছিঃ

  • হোস্টিং কোম্পানির সার্ভার ভালো না হলে, আপনার ওয়েবসাইট দ্রুত লোড হবে না। আস্তে আস্তে লোড হবে। এতে আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিটররা বিরক্ত হবে এবং আপনার ওয়েবসাইট এর জনপ্রিয়তা হ্রাস পাবে।

  • ভালো ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং না নিলে, প্রায় সার্ভার “ডাউন” থাকবে এবং মাঝে মাঝে “সার্ভার এরর” দেখাবে।
  • সার্ভার এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল হবে। ফলে ভাইরাস ও হ্যাকার দ্বারা আপনার ওয়েবসাইট আক্রান্ত হতে পারে। এর ফলাফল অত্যন্ত মারাত্মক।
  • হোস্টিং কোম্পানি ভালো না হলে তাদের সার্ভার এর ব্যাকআপ সার্ভিসও ভালো হয় না। এতে আপনার ওয়েবসাইট এর গুরুত্বপূর্ণ ফাইল হারিয়ে যেতে পারে। এমন কি আপনার পুরো ওয়েবসাইট সার্ভার থেকে হারিয়ে যেতে পারে। বুঝে দেখুন, কি ভয়ংকর ব্যাপার।
  • হোস্টিং কোম্পানি ভালো না হলে, তাদের কাস্টোমার সার্ভিস ভালো হয় না। তাদের ওয়েবসাইট এ “সাপোর্ট টিকেট” ও মোবাইল সেবা প্রায় বন্ধ থাকে। ফলে তাদের কাছ থেকে সরাসরি কোনো সাহায্যও পাওয়া যায় না। হোস্টিং কোম্পানি ভালো হলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে কাস্টোমার এর সমস্যার সমাধান করে।
হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং প্যাকেজ নির্বাচনের সময় কিছু সাবধানতা মেনে চললে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। এতে আপনি ও আপনার ওয়েবসাইট নিরাপদ থাকবেন। অযথা বাড়তি ঝামেলায় পরবেন না।

এখানে হোস্টিং কোম্পানি নির্বাচনের কিছু টিপস আপনাদের জন্য তুলে ধরছিঃ

  • ওয়েবসাইট হোস্টিং কোম্পানি গুলো শেয়ারড, রিসেলার, ভিপিএস, ক্লাউড, ডেডিকেটেড হোস্টিং নামে বিভিন্ন ধরনের হোস্টিং প্যাকেজ বিক্রি করে। আপনার ওয়েবসাইট এর ধরন ও ভিজিটর এর উপর ভিত্তি করে হোস্টিং প্যাকেজ বাছাই করা উচিত। সাধারন ব্লগ সাইট বা ছোটো খাটো ওয়েবসাইট গুলো শেয়ারড হোস্টিং দিয়ে ভালোই চলে। তবে বড় বড় ব্যবসায়ীরা ই-কমার্স ওয়েবসাইট, ই-মেইল মার্কেটিং, ভিওআইপি সার্ভিস এর জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভিপিএস, ক্লাউড, ডেডিকেটেড হোস্টিং ব্যবহার করেন। এসব হোস্টিং এ প্রচুর টাকা খরচ হয়। তবে এই সব হোস্টিং প্যাকেজ এ সেবার মান সবচেয়ে ভালো। আমাদের মতো সাধারন ব্যবহারকারী দের জন্য শেয়ারড হোস্টিং প্যাকেজ এ বিভিন্ন ক্যাটাগরির হোস্টিং প্যাকেজ থাকে। চাহিদা মতো বেছে নিলেই ভালো। কারন শেয়ারড হোস্টিং এর সার্ভার গুলো আজকাল অনেক উন্নত মানের।
  • ওয়েবসাইট এর জন্য হোস্টিং সব সময় বড় বড় হোস্টিং কোম্পানি গুলোর কাছ থেকে নেওয়া উচিত, যাদের হোস্টিং সেবার সুনাম রয়েছে। গ্রীন হোস্টিং, হোস্ট গেটর, হোস্ট পাপা, আই পেইজ এরা হোস্টিং ব্যবসায় অত্যন্ত সুনাম ধারী প্রতিষ্ঠান। এদের অতুলনীয় হোস্টিং সেবা ও ডেডিকেটেড “কাস্টমার সাপোর্ট” আপনার ওয়েবসাইটকে ইন্টারনেট এ নিরাপদ ও সবসময় অনলাইন এ রাখবে। তবে এইসব হোস্টিং প্রতিষ্ঠান থেকে হোস্টিং নিলে, খরচ অত্যন্ত বেশি পড়বে। বিদেশী হোস্টিং প্রতিষ্ঠান গুলো অনেক ব্য্যবহুল। ডলার এর মাধ্যমে এদের হোস্টিং বিল পরিশোধ করতে হয়। বাংলাদেশ থেকে ডলার এর মাধ্যমে এদের হোস্টিং বিল পরিশোধ করতে অনেক ঝামেলা। পেপাল, মানি বুকারস বা ইন্টারন্যাশনাল ভিসা/মাস্টার কার্ড ছাড়া এই সব হোস্টিং প্রতিষ্ঠানএ হোস্টিং বিল পরিশোধ করা যায় না। আর অন্যের কাছ থেকে ডলার কিনে তারপর হোস্টিং এর বিল দেওয়ার ঝামেলা যে কত বেশি তা বলে শেষ করা যাবে না। ডলার বাটপার এর হাতে পড়লে তো পুরো টাকা শেষ। এই দিক থেকে চিন্তা করলে আমাদের দেশীয় ওয়েব হোস্টিং প্রতিষ্ঠান গুলো অনেক ভালো। বিল পরিশোধ এর এতো রকমের ঝামেলা আমাদের দেশীয় ওয়েব হোস্টিং প্রতিষ্ঠান গুলোতে নেই বললেই চলে।
  • বিদেশী ভালো হোস্টিং প্রতিষ্ঠান থেকে রিসেলারহোস্টিং নিয়ে, আমাদের বাংলাদেশি হোস্টিং প্রতিষ্ঠানও আজকাল ভালো হোস্টিং সেবা দেওয়ার চেস্টা করছে। কাস্টোমার এর চাহিদার কথা বিবেচনা করে তারাও বেশ ভালো হোস্টিংসার্ভিসের নিশ্চয়তা দেয়। আসল কথা হল ওয়েবসাইট হোস্টিংএ সমস্যা থাকবেই। কখনো তা “সার্ভার” এর সমস্যা কখনো বা ওয়েবসাইট এর মালিকের ভুলের কারনে হয়। তাই নতুনদের জন্য বাংলাদেশী হোস্টিং সার্ভিসে ওয়েবসাইট হোস্ট করা সুবিধাজনক। কারন, সে কোন সমস্যার সমাধান এর জন্য সরাসরি বাংলায় কাস্টোমার কেয়ার এর নাম্বারে কথা বলে সমাধান পাবার মজাই আলাদা । বাংলাদেশী হোস্টিং কোম্পানি গুলো তুলনামূলক কম টাকায় হোস্টিং সেবা প্রদান করে। আর হোস্টিং বিল পরিশোধ করতে বেশি বেগ পেতে হয় না।
  • সার্ভার এর “আপ-টাইম” ওয়েব হোস্টিং এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বেশির ভাগ বাংলাদেশী হোস্টিং কোম্পানি কাস্টোমারকে লোভ দেখানোর জন্য কম টাকায় হোস্টিং সেবা দিয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে কম টাকার হোস্টিং সেবায় সার্ভার এর “আপ-টাইম” সমস্যা বেশি হয়। প্রায় সময় সার্ভার ডাউন থাকার কারনে, ওয়েবসাইট ঠিকমতো লোড হয় না। এটা আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। বাংলাদেশি কিমবা বিদেশী যে হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং নেন না কেন, সার্ভার এর সাধারন স্ট্যাটাস কেমন থাকবে তা নিশ্চিত হয়ে হোস্টিং নেওয়া উচিত। আজকাল অনেক বিদেশী হোস্টিং কোম্পানিতেও সার্ভার এর “আপ-টাইম” সমস্যা হয়। তাই যদি বিদেশী হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং নেওয়ার ইচ্ছা থাকে তবে অবশ্যই নামকরা হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং নেওয়া উচিত।

  • হোস্টিং এর ক্ষেত্রে “ডিস্ক স্পেস” ও “ব্যান্ডউইথ” শব্দ দুইটি বেশি শোনা যায়। আমাদের অনেকের ধরনা ১জিবি হোস্টিং এর থেকে ২জিবি হোস্টিং ভালো, ৫জিবি হোস্টিং আরো ভালো। আসলে এই ধারনাটি সম্পূর্ণ ভুল। ১জিবি, ২জিবি, ৫জিবি- এগুলো সব “ডিস্ক স্পেস”। অনেকটা আপনার মেমোরি কার্ড এর মতন। “ডিস্ক স্পেস” এ আপনি আপনার ওয়েবসাইট এর তথ্য সংরক্ষণ করে রাখবেন। আপনি আপনার মেমোরি কার্ড এ কি পরিমান তথ্য রাখবেন তার উপর ভিত্তি করে আপনার মেমোরি কার্ড কিনেন। ঠিক তেমনি হোস্টিং এর ক্ষেত্রে সেই নিয়মটি মেনে “ডিস্ক স্পেস” বাছাই করে হোস্টিং প্যাকেজ নির্বাচন করুন। ওয়েবসাইট এর আকার ও ওয়েবসাইট এর ভেতরের তথ্য যদি বেশি হয় তবে “ডিস্ক স্পেস” বেশি নিতে হবে আর ওয়েবসাইট এর আকার ও ওয়েবসাইট এর ভেতরের তথ্য যদি কম হয় তবে “ডিস্ক স্পেস” কম নিতে হবে। “ব্যান্ডউইথ” সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। “ব্যান্ডউইথ” জত বেশি হবে তত ভালো। লিমিটেড “ব্যান্ডউইথ” এর হোস্টিং প্যাকেজ নির্বাচন করা উচিত নয়। অনেকে ২০জিবি, ৫০জিবি কিমবা ১০০জিবি “ব্যান্ডউইথ” দিয়ে কম টাকায় হোস্টিং প্যাকেজ কিনে। পরবর্তীতে ওয়েবসাইট এ ভিজিটর বেশি আসলে তারা বিপদে পড়ে। অতএব ২০জিবি, ৫০জিবি কিমবা ১০০জিবি এর ফাঁদে পা না দিয়ে যারা আন-লিমিটেড “ব্যান্ডউইথ” দিবে তাদের কাছ থেকে হোস্টিং কিনুন। এতে আপনি নিশ্চিন্ত থাকবেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মাসিক হোস্টিং প্যাকেজ গুলোতে আন-লিমিটেড “ব্যান্ডউইথ” সুবিধা থাকে। আমার মতে সেগুলো সবচেয়ে ভালো। কোনো কোনো হোস্টিং কোম্পানি আন-লিমিটেড “ডিস্ক স্পেস” এর সুবিধা দেয়। এদের কাছ থেকে ১০০ হাত দূরে থাকুন। কারন এদের হোস্টিং এর মান খুব নিন্ম মানের হয়।
  • উন্নত সিপিউ ও র‍্যাম সম্রিধ্য সার্ভার থেকে ওয়েবসাইট হোস্ট করা উচিত। এতে ওয়েবসাইট দ্রুত লোড হয়। আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিটররা ও খুশি হবে। অনেক হোস্টিং কোম্পানি তাদের কাস্টোমারের সুবিধার কথা চিন্তা করে বাড়তি সিপিউ ও র‍্যাম ওয়েবসাইট হোস্টিং এ যোগ করার সুযোগ দেয়। এতে করে শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট বেশি সুযোগ পায় ও তারাতাড়ি লোড হয়। এই ধরনের “ভেলু এডেড সার্ভিস” শুধুমাত্র নামকরা হোস্টিং কোম্পানি গুলোর কাছে পাওয়া যায়। এদের কাছ থেকে হোস্টিং নেওয়া উচিত।
  • হোস্টিং এর ক্ষেত্রে “ডেডিকেটেড কাস্টোমার সার্ভিস” অত্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ। যে সব হোস্টিং কোম্পানির কাস্টোমার সাপোর্ট দিনে ২৪ ঘন্টা ও বছরে ৩৬৫ দিন খোলা থাকে, তাদেরকে বাছাই করুন আপনার ওয়েবসাইট কে হোস্ট করার জন্য। ই-মেইল, চ্যাট, মোবাইল, সাপোর্ট টিকেট এর সুবিধা আছে এমন হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং নিবেন। যাতে আপনার ওয়েবসাইট এর যে কোনো সমস্যাই আপনি হোস্টিং কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। সরাসরি যোগাযোগ এর সুযোগ থাকলে আরো ভালো। বাংলাদেশি অনেক হোস্টিং কোম্পানি আছে যারা সার্ভার এ সামান্য সমস্যা দেখা দিলে “ই-মেইল, চ্যাট, মোবাইল, সাপোর্ট টিকেট” কাস্টোমার এর সাথে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। অতএব হোস্টিং কোম্পানি গুলোর মিষ্টি কথায় না ভুলে বুঝে শুনে হোস্টিং কোম্পানি বাছাই করুন।

  • আজকাল অনেক হোস্টিং কোম্পানি আছে যারা নিত্য নতুন ফাঁদ পেতে ১০০০-১৫০০ টাকার ভেতর একসাথে “ডোমেইন” রেজিস্ট্রেশন ও হোস্টিং এর সুবিধা দেয়। তারা বিভিন্ন সস্তা হোস্টিং প্যাকেজ বানিয়ে শুধু মুনাফা বাড়ানোর চিন্তা করে। সাবধানে এই সব হোস্টিং প্যাকেজ এড়িয়ে চলুন। এই সব হোস্টিং কোম্পানির সেবার মান ভালো হয় না। আপনিই একটা সহজ হিসাব করুন- একটা “ডোমেইন” রেজিস্ট্রেশন করতে খরচ হয় ৮৫০-১০০০ টাকা। তাহলে বাকি ৫০০-৬০০ টাকার হোস্টিং কতটুকু ভালো হবে? বাকিটা আপনাদের বিবেচনায় ছেড়ে দিলাম।
  • বাৎসরিক হিসেবে হোস্টিং না নিয়ে মাসিক হিসেবে হোস্টিং প্যাকেজ বাছাই করুন। এর সুবিধা আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন। মাসিক হিসেবে হোস্টিং প্যাকেজ নিলে, আপনার যদি কোনো হোস্টিং কোম্পানি ভালো না লাগে তাহলে আপনি সহজেই অন্য হোস্টিং কোম্পানিতে সরে আসতে পারবেন। খরচও ও সাশ্রয় হবে। আর যেহেতু আপনি মাসিক কাস্টোমার, সেহেতু হোস্টিং কোম্পানি গুলো আপনাকে ভালো সার্ভিস দেওয়ার জন্য অব সময় চেষ্টা করবে।
  • যেসব হোস্টিং কোম্পানিতে দৈনিক, সাপ্তাহিক বা মাসিক ভিত্তিতে অটোম্যাটিক সার্ভার ব্যাকআপ এর সুবিধা দেয় তাদের কাছ থেকে হোস্টিং সেবা নেওয়া উচিত। এতে করে আপনার ভুলের কারনেও যদি আপনার ওয়েবসাইট থেকে মুল্যবান তথ্য হাড়িয়ে যায়, হোস্টিং কোম্পানি তাদের নিজস্ব সার্ভার ব্যাকআপ থেকে আপনার হারিয়ে যাওয়া তথ্য আপনাকে ফিরিয়ে দিতে পারবে। বেঝে দেখুন, এটা আপনার জন্য কত বড় সুবিধা।

  • অনেক বাংলাদেশি হোস্টিং কোম্পানি আজকাল মুল্য ফেরত গ্যারান্টি দেয়। তাদের মধ্যে কয়টি হোস্টিং কোম্পানি আপনাকে খারাপ হোস্টিং সেবার জন্য মুল্য ফেরত দিবে সেটা আপনারাই বিবেচনা করে দেখবেন। ৪০%, ৫০% মুল্য ছাড়ের ফাঁদে দয়া করে পা দিবেন না। এটা আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সহজ কথায়, ভালো ভালো হোস্টিং কোম্পানিতে মুল্য ছাড়ের প্রয়োজন হয় না। হোস্টিং প্যাকেজ এর মূল্য দেখে আপনি সহজেই হোস্টিং সেবার মান বুঝতে পারবেন।
  • বিদেশি বড় বড় হোস্টিং কোম্পানিতে শর্ত সাপেক্ষে মাসিক ১ পয়সা বা ১ ডলার দিয়ে হোস্টিং সেবা দেয়। ভালো করে শর্ত পড়ে দেখবেন, হোস্টিং বাবদ ১ম মাসে ১ পয়সা বা ১ ডলার এবং পরবর্তী মাসে ৭-১০ ডলার মাসিক হোস্টিং বিল লিখা আছে। অতএব ভালো করে সব কিছু পড়ে হোস্টিং কোম্পানির প্যাকেজ নির্বাচন করবেন। আজকাল বাংলাদেশি কিছু হোস্টিং কোম্পানি এই বাটপারি শুরু করেছে। বুঝতেই পারছেন কাস্টোমার ধরার জন্য দেশি-বিদেশি সব হোস্টিং কোম্পানিই এই রকম ধাপ্পাবাজি করে। এই সব ব্যাপারে সাবধান থাকবেন।
ওয়েবসাইট “ডোমেইন-হোস্টিং” এ বুঝার ও জানার অনেক কিছু আছে। আমি এই টিউনে সাধারন কিছু বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি এই টিউনটা আপনাদেরকে আপনার ওয়েবসাইট এর জন্য সঠিক “ডোমেইন-হোস্টিং” নির্বাচনে সাহায্য করবে। আমার এই টিউনটা যদি আপনাদের পছন্দ হয়, তবে নির্বাচিত টিউন মনোনয়ন এ ভুলবেন না। আপনাদের মূল্যবান মতামত ও লাইক আমাকে অনুপ্রেরণা দিবে। একটু সময় পেলে আমার এই ওয়েবসাইট থেকে ঘুরে আসতে পারেন।

ডোমেইন ও হোস্টিং কি?

ইন্টারনেট এ ঘুরতে ঘুরতে ডোমেইন ও হোস্টিং সম্পর্কে বেশ ভালো একটা টিউটোরিয়াল খুজে পেলাম। আপনাদের বুঝার সুবিধার জন্য কিছুটা পরিবর্তন করে প্রকাশ করছি। আমরা যারা ওয়েব সাইট তৈরি করতে চাই, তাদের সামনে সর্বপ্রথম যেই প্রশ্নটি এসে যায় ডোমেইন ও হোস্টিং কি? মূলত  ডোমেইন ও হোস্টিং কি এই বিষয়ই আলোচনা করা হবে এই টিউনে। আশা করি টিউনটি পড়ার পর আপনার ডোমেইন হোস্টিং সম্পর্কে একটি ধারণা এসে যাবে।
ডোমেইন কি?
ডোমেইন ইংরেজি শব্দ যার বাংলা অর্থ স্থান। আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট খুলতে চান তবে ইন্টারনেটে আপনাকে একটি স্থান তথা ডোমেইন কিনতে হবে।
Ex: greenseotools.com (এটিও একটি ডোমেইন)
টপ লেভেল ডোমেইনঃ .com .net .org .info ইত্যাদি ডোমেইনকে টপ লেভেল ডোমেইন বলা হয়। (এইসব ডোমেইন কিনতে হয়)
ফ্রী ডোমেইনঃ .blog.com .xtgem.com .blogspot.com .tk ইত্যাদি ডোমেইনকে ফ্রী ডোমেইন বলা হয়। (এইসব ডোমেইন ফ্রীতে পাওয়া যায়)
মূল্যঃ একটি টপ লেভেল ডোমেইনের দাম ১বছরের জন্য ৮৫০-১০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
হোস্টিং কি?
বেশির ভাগ লোকই ডোমেইন কি তা জানে তবে হোস্টিং কি তা বুঝতে পারে না। আপনি যদি একটি ডোমেইন কিনেন অবশ্যই তার জন্য একটি হোস্টিং কিনতে হবে। আপনি একটি ডোমেইন কিনলেন মানে ইন্টারনেটে আপনি একটি স্থান কিনলেন, এখন আপনার ডোমেইনটিকে ২৪/৭ অনলাইনে রাখতে হবে। এর জন্য দরকার আপনার হোস্টিং কোম্পানি। বিভিন্ন হোস্টিং কোম্পানি আছে যারা সাইট হোস্টিং করে থাকে। আপনার যেই হোস্টিং প্যাকেজটি ভালো লাগে আপনি সেটি কিনতে পারেন।
 প্রকারভেদঃ শেয়ারড, রিসেলার, ডেডিকেটেড, ভিপিএস ইত্যাদি।
মূল্যঃ ৫০০ টাকা থেকে ১লাখ+ টাকাও হতে পারে।
কিভাবে ডোমেইন কিনবেন?
ডোমেইন কিনার জন্য প্রথমেই যেকোনো হোস্টিং কোম্পানির সাইটে যেতে হবে। হোস্টিং কোম্পানির সাইটে গিয়ে ডোমেইন বিভাগে যান। এরপর সেখান থেকে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন অপশন টিতে যান।
এবার আপনি যেই নামে ডোমেইন কিনতে চান তা দিয়ে লুকআপ করুন। আপনার কাঙ্খিত ডোমেইনটি পেয়ে গেলে ঐ হোস্টিং সাইটে রেজিস্ট্রেশন করে তাদের ইউজার হয়ে তা কিনার জন্য আবেদন করুন। সর্বশেষ আপনার ডোমেইন ফী দিয়ে ডোমেইনটি কিনে নিন। ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এর মেয়াদ সাধারনত ১ বছরের জন্য হয়ে থাকে।
কিভাবে হোস্টিং কিনবেন?
এবার আমি দেখাবো কিভাবে হোস্টিং প্যাকেজ কিনতে হয়। আশা করি আপনাদের কাছে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যাবে। হোস্টিং প্যাকেজ কিনতে প্রথমেই যেকোনো হোস্টিং সাইটে প্রবেশ করুন। তারপর হোস্টিং বিভাগে যান। হোস্টিং প্যাকেজ কিনতে আপনার একটি ডোমেইন থাকতে হবে নতুবা আপনাকে নতুন একটি ডোমেইন কিনতে হবে। এবার আপনার ডোমেইনটি লিখে কোন হোস্টিং প্যাকেজ কিনতে চান সেটি সিলেক্ট করুন।

এবার হোস্টিং সাইটে একটি আকাউন্ট খুলুন তারপর তাদের পদ্ধতি অনুসরণ করে টাকা পরিশোধ করে দিন তাহলেই আপনার হোস্টিং প্যাকেজটি আপনি পেয়ে যাবেন, ধন্যবাদ।
নোটঃ আমি আপনাকে রেকমেন্ড করবো যে, এক সাইট থেকেই ডোমেইন ও হোস্টিং দুটিই কিনতে। এতে আপনি অনেক ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে পারবেন।

ডোমেইন কিনবেন? একটু বুঝে শুনে কিনুন, যদি প্রতারিত হতে না চান! মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। কাজে লাগবে অবশ্যই

সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি  সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।
আমি সুমির। ছোট খাটো একটা ওয়েব হোস্টিং বিজনেস আছে। হোস্টিং বিজনেস এর খাতিরে অনেক সময় সেলসে ফোন রিসিভ করতে হয়। কাস্টমারদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। মাঝে মাঝে কিছু প্রশ্ন শুনে অবাক হতে হয়।  যেগুলা শুনে হাসব না কাঁদব বুঝতে পারি না।
মাঝে মাঝে এই প্রশ্নটাই বেশী আসে কাস্টমার এর কাছ থেকে। আচ্ছা ভাই আপনারা যে ডোমেইনটা দিচ্ছেন সেটা কি প্রোমো না প্রিমিয়াম? যারা ডোমেইন হোস্টিং এর ব্যাপারে অবগত আছেন, নিশ্চয় এই প্রশ্ন দেখে মিটিমিটি হাসছেন? কারন এতদিন জানা ছিল ওয়েব হোস্টিং প্রিমিয়াম এবং বাজেট কোয়ালিটির হয়, কিন্তু ডোমেইন প্রোমো/প্রিমিয়াম কোয়ালিটির হয় তা আমার জানা ছিল না। বর্তমানে বাংলাদেশী কিছু ডোমেইন হোস্টিং কোম্পানীর মহান আবিষ্কারের জন্য এই উল্লেখিত প্রোমো/প্রিমিয়াম কোয়ালিটির দেখা পাওয়া যাচ্ছে।
অবশ্য আমার এই লেখাটার কিছুটা ভুল আছে। কেননা প্রিমিয়াম ডোমেইন বলে অবশ্যই কিছু একটা আছে, কিন্তু সেটার কাহিনী টা অন্যরকম। সেটা হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট প্লেস এ অনেক ডোমেইন আছে, যেগুলা অনেক আগেই কেনা হয়ে গেছে এবং সেই ডোমেইন কিনতে গেলে ১০০ ডলার কিংবা এর কম মূল্য থেকে শুরু করে কয়েক মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত দাম দিতে হবে আপনাকে। সেগুলা কে আমি/আমরা সাধারনত প্রিমিয়াম ডোমেইন বলে জানি।
পরে চিন্তা করলাম এই প্রোমো/প্রিমিয়াম কি জিনিস সেটা তো জানা দরকার। পরে দেখি কাহিনী হচ্ছে এইটা। প্রোমো/প্রিমিয়াম দুইটার কোয়ালিটি নাকি প্রাই একই। সমস্যা হচ্ছে শুধু প্রোমো ডোমেইন নেম সার্ভার/ডিএনএস ম্যানেজম্যান্ট করতে গেলে নাকি তাদের সাপার্টে যোগাযোগ করতে হবে। এবং ডোমেই রেজি: করতে চাইলে সময় ১দিন থেকে ৭ দিন পর্যন্ত লাগতে পারে। পরে চিন্তা করলাম কাহিনীর আরো গভীরে যাওয়া দরকার। কারন আমার ডোমেইন এর ম্যানেজমেন্ট আমি করব সেটার জন্য প্রোভাইডারের কাছে যেতে হবে কেন (সাময়িক সমস্যা হলে সেটা অন্য কথা) এবং এই ডিজিটাল যুগে কেন ডোমেইন রেজি: করতে ৭ দিন লাগবে? কারন আমি ডোমেইন রেজি: বাটনে ক্লিক করা মাত্র ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন হয়ে যায়।
ঘাটাঘাটি করে যা দেখলাম, সেটা হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল কিছু কোম্পানী অফারে কাস্টমার এর কাছে ডোমেইন ২/৩/৪ ডলারে বিক্রি করে এবং বাংলাদেশী কিছু কোম্পানী কাস্টমার এর কাছ থেকে টাকা/অর্ডার নিয়ে সেই ডোমেইন কিনে বিক্রি করে ২০০/৩০০/৪০০ টাকায়। এবং এইসব ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানী শুধুমাত্র কাস্টমার এর কাছে ডোমেইন এই  ২/৩/৪ ডলারে বিক্রি করে, কিন্তু কোন রিসেলার কাছে এই প্রাইজে বিক্রি করে না। যার জন্য এই সব ডোমেইন এর বিলিং প্যানেল এ ম্যানেজম্যান্ট অটোমেশন করা সম্ভব হয় না। ফলস্বরুপ এইসব প্রোমো নামের ডোমেইন এর কন্ট্রোল প্যানেল নিজের কাছে রেখে দেন এই সব বাংলাদেশী প্রোমো প্রোভাইডাররা।
এই সব মেইন প্রোভাইডার যারা ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটে এই দামে ডোমেইন বিক্রি করে, তারা যদি কোনভাবে জানতে পারে এভাবে তাদের কাছ থেকে ডোমেইন কিনে সেগুলো প্রোমো ডোমেইন/প্রোমোশনাল ডোমেইন ইত্যাদি নামে বিক্রি করা হচ্ছে, তখন সাথে সাথে এই সব  ডোমেইন সহ একাউন্টগুলো সাসপেন্ড করা হবে। ফলস্বরুপ কি হবে, আপনার সাধের ডোমেইন হটাৎ করে সারা জীবনের জন্য গায়েব হয়ে যেতে পারে!!!
কিন্তু এর পরের কাহিনীটা ভয়াবহ। শুনে আবার হার্টফেইল কইরেন না। কেননা ডোমেইন কন্ট্রোল প্যানেল নিজের কাছে না থাকার কারনে আপনার ডোমেইন এর পপুলারিটি বুঝে রিনিউ করার সময় আসলে তখন ইচ্ছামত দাম হাকানো হয়। এটার পরিমান ৩ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা কিংবা এর অধিক! চিন্তা করুন ১ টি বছর কস্ট করে ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে একটি সাইট দাড় করালেন এবং কিছুদিনের মাঝে সেটা থেকে আয় করবেন/কিংবা সবে আয় করা শুরু করেছেন তো এমন সময়ে যদি এই ঘটনা ঘটে তাহলে আপনার কেমন লাগবে??? তখন যদি আপনার সামর্থ্য থাকে তবে তার নির্ধারিত দামে ডোমেইন রিনিউ করবেন না হলে ঐ ডোমেইন এর আশা বাদ দিবেন এবং একবার যদি বলেন রিনিউ করবেন না তাহলে দেখবেন কয়েক দিনের মাঝে ঐ ডোমেইন অন্য আরেকজনের কাছে বিক্রি করে ফেলছে ঐ প্রোভাইডার। কিছু কিছু প্রোভাইডাররা এইসব রিনিউ এর ধার ধারে না, দেখবেন ৬ মাস যেতে না যেতেই ডোমেইনটা আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে, সুযোগ মত দাম নিয়ে। ভাবুনতো একবার কত বড় প্রতারনা/অন্যায় করা হল আপনার সাথে???
এই সব ভুক্তভোগীরা আমাকে ফোন করে প্রথমেই বলে ভাই এই বছরের কথা জানার দরকার নাই পরের বছর রিনিউ চার্জ কত? আমি বলি আমাদের সাইটে উল্লেখ আছে রিনিউ প্রাইজ একই। পরে বলে ভাই এর থেকে বেশী দাম নিবেন নাতো আবার? কারন ভাই এর আগে ধরা খাইছি, কিংবা বলে আমার পরিচিত লোক এইভাবে ধরা খাইছে। প্রোভাইডার বলছে অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে, না দিলে রিনিউ হবে না। এই প্রশ্নটার পর কাস্টমার কে জবাবটা ভালোভাবে দিতে হয়। সাধারন দেখা যায় ইন্টারন্যাশনাল প্রোভাইডাররা ডোমেইন এর প্রাইজ ১/২/৩ বছর পর কিছুটা বাড়িয়ে দেয় তবে সেটা সময় ১ ডলার এর নিচে থাকে। যার প্রভাব পরে আমাদের এই ছোটখাটো ব্যাবসার উপরে। কেননা এই বছর জনপ্রিয় ডোমেইন রিসেলার প্রোভাইডার Resell.Biz তাদের প্রত্যেকটা ডোমেইন এর মূল্য ১৫ সেন্ট দাম বাড়িয়েছে অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকায় ১২ টাকার মত প্রতি ডোমেইন এ বেড়ে গেছে। কিন্তু তার পরেও আমাদের কোম্পানী সেই আগের মূল্যে ৮০০ টাকায় ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন/রিনিউ/ট্রান্সফার করছি। কিন্তু এইভাবে যদি ধাপে ধাপে ডোমেইন এর দাম বাড়তে থাকে, তাহলে আমাদের টিকে থাকার স্বার্থে ডোমেইন এর দাম ৫০/১০০ টাকা বাড়াতে হবে। তখন তাদের বলি যদি কখনও ডোমেইন এর দাম বাড়ে তাহলে সেটা ৫০/১০০ টাকা সর্বোচ্চ বাড়তে পারে এবং এই দাম বৃদ্দির ঘোষনা ১ মাস আগে ঘোষনা করা হবে এবং কত তারিখ থেকে প্রযোজ্য হবে তা আমাদের সকল কাস্টমারদের কাছে কয়েক ধাপে ইমেইল করা হবে। এবং সাইটে সেই নতুন প্রাইজ উল্লেখ থাকবে এবং এই মূল্য শূধু আপনার জন্য না সবার জন্য প্রযোজ্য হবে এবং সেটা যদি আপনার/অন্য কারো পছন্দ না হয় তাহলে যে কোন সময় আপনি ডোমেইন ট্রান্সফার করে অন্য কোথাও চলে যেতে পারেন নিশ্চিন্তে। বাকিটুকু আপনার ইচ্ছা।
দ্বিতীয়ত প্রশ্ন দাম নিয়ে। যখন বলি .কম ডোমেইন এর দাম ৮০০ টাকা। তখন অনেক কাস্টমার বলে একি বলছেন ভাই .কম ডোমেইন এর দাম তো  ২০০/৩০০/৪০০ টাকা। অমুক কোম্পানীতো বিক্রি করছে। এর পরে জবাব আর কি দিব? আশা করি আপনারা এর জবাব পেয়ে গেছেন।
কারন একটা .কম ডোমেইন এর দাম ৭০০ টাকার মত যদি আপনি মেইন রিসেলার হয়ে থাকেন এবং এই প্রাইজটা পাবার জন্য আপনাকে যথেস্ট ইনভেস্ট করতে হবে ডোমেইন এর ফান্ড এর জন্য। বাংলাদেশী অথবা অন্য কোন প্রোভাইডার এর কাছ থেকে ডোমেইন রিসেলার নিলে সেক্ষেত্রে আরও বেশী দাম লাগবে। তাছাড়া বাংলাদেশী যেসব প্রোভাইডাররা যারা যথেস্ট সুনামের সাথে ব্যাবসা করে আসছে তাদের প্রাইজ গুলো একটু কষ্ট করে দেখে নিবেন। আশা করি তখন ব্যাপারটা পরিস্কার হয়ে যাবে।
তো বকবক অনেক্ষন করলাম। আপনি যেখান থেকেই ডোমেইন নিন না কেন, একটু বুঝে শুনে নিবেন এবং অবশ্যই জেনে নিবেন আপনি ফুল কন্ট্রোল প্যানেল পাচ্ছেন কি না। তা না হলে পরে আপনার আফসোসের সীমা থাকবে না।
যাই হোক ভালো এবং সুস্থ থাকবেন সবাই। সামনে আরো আসছে আমার ডোমেইন হোস্টিং বিষয়ক লেখা। সে পর্যন্ত আপাতত অপেক্ষা...
কারো ভালো লাগলে কমেন্ট করবেন, কিন্তু খেয়াল রাখবেন আপনাদের কমেন্ট যেন বিজ্ঞাপনধর্মী না হয়।
বি:দ্র: যারা এই লেখাটি পড়ছেন, তাদের কাছে যদি ভালো লেগে থাকে আশা করি সবাই এই লেখাটি শেয়ার করবেন। অন্তত কিছু মানুষ বেঁচে যাবে এই ধরনের প্রতারকদের হাত থেকে।

ওয়েব হোস্টিং কেনার আগে বিবেচ্য বিষয়াবলী

যেখানে আমাদের ওয়েবসাইট এর পেজ গুলো থাকে, সেটাই হলো ওয়েব হোস্টিং। প্রতিটা ওয়েবসাইট অসংখ্য পেজ নিয়ে তৈরি, এই পেজ গুলো থাকার স্থানই ওয়েব হোস্ট বা ওয়েব হোস্টিং নামে পরিচিত। এই স্থান গুলো হল সার্ভার এর হার্ডডিস্কের স্পেস বা স্থান। এই সার্ভার কম্পিউটার গুলোই বিশ্বের সবগুলো ওয়েবসাইট এর ডাটা সংরক্ষণ করে রাখে। এটা কোনো এক জায়গা বা একটা প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করে না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন স্থানে ডাটা সেন্টার বা সার্ভার সেন্টার বসিয়ে ওয়েব হোস্টিং সেবা প্রদান করে।

হোস্টিং নির্বাচনের আগে নিন্মোক্ত বিষয় গুলো বিবেচনায় রাখা আবশ্যকঃ

সার্ভার এর অপারেটিং সিস্টেমঃ
হোস্টিং সার্ভার গুলো লিনাক্স কিমবা উইন্ডোস সার্ভার অপারেটিং সিস্টেমের হতে পারে। ওয়েবসাইট এর ফাংশনালিটি ও কনফিগারেশনের উপর হোস্ট এর অপারেটিং সিস্টেম ততটা প্রভাব ফেলে না। কিন্তু উইন্ডোস সার্ভার অপারেটিং সিস্টেমের চাইতে লিনাক্স সার্ভার অপারেটিং সিস্টেম অত্যাধিক জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত। আর তুলনামূলক সস্তাও বটে। তাই, যদি বাছাই করে হোস্টিং কিনতে হয়, তবে লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম হোস্টিং সার্ভার নেয়াই ভালো।
ওয়েব হোস্টিং এর প্রকারভেদঃ
শেয়ারড, ভিপিএস, ডেডিকেটেড এই তিন রকমের হোস্টিং বেশ প্রচলিত। শেয়ারড হোস্টিং এর ক্ষেত্রে অনেকগুলো ওয়েবসাইট একটা ওয়েব সার্ভার এ বিদ্যমান থাকে। প্রতিটি ওয়েবসাইট এর জন্য সার্ভার এ একটা করে স্বতন্ত্র ফোল্ডার থাকে, যা দ্বারা প্রতিটি ওয়েবসাইট ঐ সার্ভার এ আলাদা ভাবে থাকে। সবচেয়ে কম দামে এই হোস্টিং গুলোই পাওয়া যায়। নতুন যারা হোস্টিং নিতে চান তাদের জন্য সাধারনত শেয়ারড হোস্টিং সবচেয়ে ভালো অপশন। কম ভিজিটর এর ওয়েবসাইট এর জন্য এর কোনো বিকল্প নেই। সাধারনত শেয়ারড হোস্টিং এর সার্ভার যে কোনো ওয়েবসাইট এর জন্য ৫০০০০ ভিজিটর এর চাপ স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারে। আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ এর শেয়ারড হোস্টিং সবচেয়ে বেশি ভিজিটর কে সার্ভিস দিতে পারে। এই ধরনের শেয়ারড হোস্টিং সার্ভার অনেক বেশি শক্তিশালী হয়। হোস্ট অর্থাৎ সার্ভার কনফিগারেশনের উপর ভিত্তি করেই কেবলমাত্র এটা ঠিক করা যায়।  এর চাইতে বেশি ভিজিটর হলে ভার্চুয়াল সার্ভার বা ডেডিকেটেড ব্যবহার করতে হবে আপনাকে। ভার্চুয়াল সার্ভার বা ভিপিএস হল ভার্চুয়াল মেশিন। যদিও এগুলো ডেডিকেটেড অর্থাৎ ১ টা ফিজিক্যাল সার্ভার এ বিদ্যমান থাকে। মূলকথা, ডেডিকেটেড সার্ভার এর কিছু অংশ নিয়ে ভার্চুয়াল সার্ভার গুলো তৈরি হয় যেগুলো প্রায় ডেডিকেটেড সার্ভার অর্থাৎ ফিজিক্যাল সার্ভার এর মতই আচরণ করে। ওয়েবসাইট যদি অত্যন্ত ভারী আর প্রচুর ভিজিটর আসার মত সামর্থ্যবান হয়, তবে ভিপিএস বা ডেডিকেটেড সার্ভারই ভরসা।
ডিস্ক স্পেসঃ
আপনার ওয়েবসাইট এর ডাটা বা জিনিসগুলো রাখার জন্য আপনি কতটুকু স্থান পাচ্ছেন, সেটাই হল ডিস্ক স্পেস। সাধারণত ২০০ মেগাবাইট হোস্টিং হলেই ছোট একটি ওয়েবসাইট এর জন্য যথেষ্ট হয়। কিন্তু ডায়নামিক কিমবা সিএমএস বা আরো ভারী ওয়েবসাইট হলে, সেক্ষেত্রে ডিস্ক স্পেস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শেয়ারড হোস্টিং এ অনেক সময় আন লিমিটেড ডিস্ক স্পেস অফার থাকে। কিন্তু বাস্তবে সেখানে অনেক নিয়ম-কানুন বা কন্ডিশন দেওয়া থাকে। তাই আন লিমিটেড ডিস্ক স্পেস অফারের শেয়ারড হোস্টিং বর্জন করাই ভালো। তাছাড়া আন লিমিটেড ডিস্ক স্পেস অফারের শেয়ারড হোস্টিং এর সার্ভার আপটাইম ভালো হয় না। আপনার যদি মনে হয়, আপনার ওয়েবসাইট এ অনেক পেজ বা লেখা থাকবে, ওয়েবসাইট এ অনেক ডাটা থাকবে তবে ২ জিবি, ৫ জিবি বা ১০ জিবি হোস্টিং বেছে নিতে পারেন। মুভি ডাউনলোড বা বড় ফাইল ডাউনলোড ভিত্তিক ওয়েবসাইট গুলোতে সাধারণত আন লিমিটেড হোস্টিং এর প্রয়োজন হয়। এসব ক্ষেত্রে আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ থাকা বাঞ্ছনীয়।
ব্যান্ডউইথঃ
আপনার ওয়েবসাইট এর ভিজিটরের কম্পিউটার আর ওয়েব হোস্টিং সার্ভার এর মধ্যে কতটুকু ডাটা আদান প্রদান হতে পারবে তা বোঝাতেই ব্যান্ডউইথ লিমিট ব্যবহার করা হয়। ব্যাপারটা এমন, আপনার ওয়েবসাইট এর একটা পাতার সাইজ ১০ কিলোবাইট। যখন একজন ভিজিটর ঐ পাতাটি একবার দেখেন, তখন  আপনার ব্যান্ডউইথ লিমিট থেকে ১০ কিলোবাইট কাটা যায়। এটি সাধারণত মাসের হিসেবেই গননা করা হয়। শুধু পেজ দেখলেই নয়, আপনি যখন কোনো ফাইল আপলোড দিচ্ছেন, তখন আপনার ঐ ফাইল এর সাইজ এর ব্যান্ডউইথ কাটা হয়। তাই এই ব্যান্ডউইথ লিমিট এর ঝামেলা থেকে বাচার জন্য আন লিমিটেড ব্যান্ডউইথ সুবিধা আছে এমন হোস্টিং বেছে নেওয়া উচিত।

হোস্টিং কি? হোস্টিং কোম্পানির কাছে আমাদের চাহিদা কি?

Ads by Techtunes - tAdsTechshop Bangladesh is an online eCommons shop that sells the bits and pieces to make your electronics projects possible and mak

হোস্টিং কি?

আপনার ব্যক্তিগত কিমবা ব্যবসার জন্য একটি ওয়েবসাইট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনলাইনে আপনার ওয়েবসাইট কে প্রকাশ করে ইন্টারনেট ভিজিতর দের কাছে আপনার ওয়েবসাইট এর তথ্য গুলোকে পৌঁছে দেওয়ার জন্য হোস্টিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি চাইলে আপনার ওয়েবসাইট আপনার নিজের কম্পিউটার থেকেও হোস্ট করতে পারেন। এক্ষেত্রে পুরো ব্যপারটা অনেক জটিল। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমরা আমাদের ওয়েবসাইট গুলোকে বিভিন্ন হোস্টিং কোম্পানির সার্ভার এ হোস্ট করি। বস্তুত এটা অনেকটা সুবিধাজনক ও অর্থ সাশ্রয়ী।

হোস্টিং কোম্পানির কাছে আমাদের চাহিদা কি?

আমরা কেন হোস্টিং কোম্পানি গুলোতে আমাদের ওয়েবসাইট হোস্ট করবো, এ প্রশ্নটার উত্তর খুব সহজ। হোস্টিং কোম্পানি গুলো অনেক সস্তায় হোস্টিং সার্ভিস প্রদান করে। কিন্তু নিন্মমানের হোস্টিং সার্ভিস আপনার ওয়েবসাইট এর বারোটা বাজাবে। তাই শুধুমাত্র টাকার কথা চিন্তা করে কমদামী হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং সার্ভিস নেওয়া উচিত নয়।
  • ১. কি ধরনের হোস্টিং সার্ভার থেকে হোস্টিং কোম্পানি আপনাকে হোস্টিং সার্ভিস দেবে তা আপনি শুরুতেই হোস্টিং কোম্পানি থেকে জেনে নিন।
  • ২. হোস্টিং সার্ভার কথায় অবস্থিত, এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সাধারনত ইউএসএ, ইউকে, কানাডার সার্ভার গুলো উন্নত মানের হয়। তবে আজকাল সুইডেন, নরওয়ে এই সাব দেশের সার্ভার গুলোর পারফরমেন্স বেশ ভালো।
  • ৩. সার্ভার এর আপ টাইম কেমন হবে মানে কত পারসেন্ট সার্ভার আপ টাইম পাওয়া যাবে সেই বিষয় এ নিশ্চিত হয়ে নিন। ১০০% সার্ভার এর আপটাইম কেউ দিতে পারে না। তবে ১০০% এর কাছাকাছি সার্ভার এর আপটাইম এর গ্যরান্টি যদি কোনো হোস্টিং কোম্পানি দেয়, তবে তাদের কাছ থেকে সব কথা বুঝে নিবেন।
  • ৪. সার্ভার ব্যবহার এর ক্ষেত্রে আপলোড ও ডাউনলোড লিমিটেড নাকি আন লিমিটেড তা জেনে নিন।
  • ৫. হোস্টিং কোম্পানি আপনাকে কি কি সার্ভিস ও সুবিধা দেবে তা বুঝে নেওয়ার চেস্টা করুন। আপনার নিজস্ব কোনো চাহিদা থাকলে তাদের কে আগে জানান।
  • ৬. হোস্টিং নেওয়ার আগে হোস্টিং কোম্পানির পূর্ব নির্ধারিত নিয়ম কানুন জেনে নিন। এতে অনেক সময় অনেক ঝামেলা থেকে সহজে বের হয়ে আসা যায়।
  • ৭. হোস্টিং কোম্পানি পূর্ব নির্ধারিত কোন হোস্টিং প্যকেজটি আপনার জন্য ভালো হবে তা জেনে নেওয়ার চেস্টা করুন। পরে নিজে বিবেচনা করে একটি হোস্টিং প্যকেজটি নির্বাচন করুন।
  • ৮. হোস্টিং কোম্পানি থেকে হোস্টিং প্যকেজটি নির্বাচন এর পর টাকা পয়সার লেনদেন এর পুরো ব্যপারটি বিস্তারিত জেনে ও বুঝে নিন। টাকা পয়সার লেনদেন এর রসিদ সব সময় সংগ্রহে রাখুন।

সৌজন্যেঃ গ্রীন হোস্টিং



ফ্রম টেকটিউন্স